কথোপকথন
ইন্দিরা চন্দ
রেল গাড়ির কামরায় হঠাৎ দেখা
না না এ রবি ঠাকুরের সেই তার সাথে
দেখা হওয়ার মতো নয়
মহানায়ক উত্তম কুমার ওরফে টালিগঞ্জ
থেকে পাতাল রেলে উঠে চোখ পড়ল
অপরিচিত মানুষটির দিকে
সেই ঘিয়ে মলাটে
লাল ছাপায় লেখা
“শেষের কবিতা
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর”
বিশ্বভারতীর তকমা আঁটা সেই পুরানো মলাটের বই পড়ছেন উনি
বাকি যাত্রীদের বেশীর ভাগের হাতে মোবাইল, কারো হাতে বই কখনো চোখে পড়েনি, তাও আবার রবি ঠাকুরের লেখা
অবাক হলাম
নীল শার্ট , কালো প্যান্ট
কালো জুতো
চামড়ার ল্যাপটপের ব্যাগ কোলে
২০২৩ এর গতিময় আধুনিকতায়
১৯২৯ এর প্রেম নজর কাড়লো
সামনে গিয়ে দাঁড়ালাম
ব্রুটের গন্ধ সাথে ক্যালভিন ক্ল্যেন
নাকে এলো
চুলের পারিপাট্য, রোদ চশমার ব্র্যান্ডে
হাল ফ্যাশনের উগ্রতা
এ বৈপরীত্য কে স্বাগত জানিয়ে
নির্বাক অথচ জিজ্ঞাসু মন প্রশ্ন করলো
“শেষের কবিতা ছাড়া আর কি বই ভাললাগে?”
“কি গান শোনো?”
“কেমন সিনেমা পছন্দ ?”
“নাটক? আড্ডা? চা? কফি?”
আরো অনেক গতানুগতিক কথা মনের মাঝে যাতায়াত করতে থাকলো
যতীন দাস পার্কের কিছু পরে বইটা
সযত্নে ব্যাগে রেখে মুখ তুলে দেখলো অচেনা মানুষটি
একটু বেশিক্ষণ কি তাকালো আমার দিকে?
প্রশ্নের উত্তর গুলো দিলো বোধহয়
নাকি নতুন কিছু প্রশ্ন করলো নীরব চোখে
তারপর
ধীর পায়ে নেমে গেলো রবীন্দ্রসদনে
আমি নেমে গেলাম পরের স্টপ পার্ক স্ট্রিটে
মিশে গেলাম জনস্রোতে
অনুলেখ্খিত এ কথোপকথন ডুবে গেল স্মৃতির গভীরে..
Comments are closed